সোহেল চুপচাপ স্ত্রী ঝুমুরের কথা শুনলো! তারপর চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, তুমি সত্য বলেছো। আল্লাহ্ তোমাকে শ্বশুর শাশুড়িকে সেবা করতে বাধ্য করেননি। কিন্তু মানবিকতা বলে তো একটা কথা আছে। আমি মা বাবার একমাত্র সন্তান। উনারা দুজনেই অসুস্থ, আমি চাকুরী করি। এখন উনাদের পাশে থাকা কি তোমার দায়িত্ব না?
– দায়িত্ব বলছো কেন? আল্লাহ্ তো আমাকে এই দায়িত্ব দেননি! তুমি অন্য ব্যবস্থা করো। দেখো তাদের দেখাশোনা করতে কোন কাজের লোক পাওয়া যায় কিনা!
– কাজের লোক কি নিজের লোকের মত দেখাশোনা করবে? আমাদের বাঙালী সমাজ কি শ্বশুর শাশুড়িকে দেখাশোনা করা দায়িত্ব মনে করেনা?
– তুমি ইসলাম নিয়ে কথা বলো। বাঙালী সমাজে অনেক কিছু আছে যা ইসলাম বিরোধী।
সোহেল বেশ কিছুক্ষন নিচের দিকে তাকিয়ে থাকলো। তারপর ধীরে ধীরে বললো, আলহামদুলিল্লাহ্। তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি আশা করবো তুমি সব সময় বাঙালী সেন্টিমেন্ট পরিহার করে চলবে। আমার সাথে কোন ক্ষেত্রে যেন এই সেন্টিমেন্ট না দেখাও।
– অবশ্যই দেখাবোনা। ইসলামের উপর থাকলে আমার কোন কথা থাকবেনা।
– তোমাকে আবারো ধন্যবাদ। আমার বাবা মায়ের যেহুতু আমি ছাড়া কেউ নেই সেহুতু ব্যবস্থা আমাকেই করতে হবে। আর কাজের লোক দিয়ে যেহুতু প্রপারলি আমার কাজ সম্পাদন হবেনা তাই দ্রুত আমি আরো একটি বিয়ে করে মা বাবার কাছে রেখে আসবো। ইসলাম আমাকে চারটি বিয়ের অনুমতি দিয়েছে। তোমার নিশ্চয় কোন আপত্তি নেই?
ঝুমুর এক দৃষ্টিতে সোহেলের দিকে তাকিয়ে থাকলো। সোহেল একটু পিঠ চাপড়ে দিয়ে বললো, চলো ঘুমাতে যাই।
…
…
…
সোহেল ঘুম থেকে উঠে দেখে ঝুমুর পাশে নেই। বেড রুম থেকে ড্রয়িং রুমে এসে দেখে সে ব্যাগ গুছিয়ে বসে আছে। একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো, তুমি এই সকালে কোথায় যাচ্ছো?
– তুমি রেডি হয়ে নাও। আমাকে বাবা মায়ের কাছে রেখে আসো। এই সময় উনাদের পাশে আমার থাকা উচিৎ।
– কেন তোমার বাবা মায়ের কি হয়েছে?
– আমি আমার শ্বশুর শাশুড়ির কথা বলছি।
– ও আচ্ছা! আমাকে দশটা মিনিট সময় দাও। রেডি হতে এর থেকে এক সেকেণ্ডও বেশি সময় লাগবেনা….